মহানবি সাঃ এর মুখের লালা।
Sajjadur Rahman
মহানবী (সাঃ) কে আল্লাহ তায়ালা মানব জাতি সহ সারা বিশ্বের সকল কিছুর জন্য রহমত হিসাবে প্রেরণ করেছিলেন। শুধু উনার শিক্ষা এবং আদর্শ ই কেবল মানুষের জন্য শান্তি ও বরকতের উৎস ছিলো না বস্তুত পক্ষে উনার সকল কিছূই ছিলো মানুষের জন্য উপকারী । আল্লাহপাক উনার মধ্যে অপকারী কোন কিছুই রাখেন নি ।
এমনি এক আশ্চর্য মুজিজা হলো মহানবী (সাঃ) এর পবিত্র মূখের লালা । সাধারণতঃ দেখা যায় একজন মানুষের মুখের লালা আরেকজন মানুষের জন্য কোন উপকার বয়ে আনেনা । আর যদি মানুষটি অসুস্থ বা অপরিস্কার হয় তাহলে তো তা অবশ্যই ক্ষতিকর ।
মহানবী (সাঃ) এর লালা ছিলো ব্যতিক্রম বরং উনার মুখের লালা ছিল অসুস্থ ব্যক্তির জন্য শিফা বা রোগ মুক্তির উছিলা।
*** রোগ মুক্তিতে নবিজির মুখের লালা-
১। হযরত সাহাল ইবনে সাদ(রাঃ) হইতে বর্নীত আছে যে , খায়বর যুদ্ধের সময় নবী করীম (ছঃ) বলেন , আগামীকাল এই পতাকা আমি এমন একজনের হাতে দিব যাহার হাতে খয়বরকে আল্লাহ বিজয় দান করবেন । যেই লোক আল্লাহ ও তাঁহার রাসূলকে ভালবাসে , আল্লাহ ও তাঁহার রাসূলও সেই লোককে ভালবাসে। হযরত সাহাল (রাঃ) বলেন , সকালে কার হাতে পতাকা দেওয়া হবে এই চিন্তায় লোকেরা সারারাত কাটায়া দিলো । সকালে সবাই নবীজির নিকট সমবেত হইলে । সবাই কামনা করছিলো যে পতাকা তাকে প্রদান করা হউক ।
নবী করীম(ছঃ) জিজ্ঞাসা করিলেন আলী ইবনে আবু তালেব কোথায় ? লোকেরা বল্ল তার চোখ যন্ত্রনাকরছে । নবীজি একজন লোক দিয়ে হযরত আলি (রাঃ)কে ডেকে পাঠালেন।এবং পবিত্র মুখের খানিকটা লালা হযরত আলী (রাঃ) এর চোখে লাগিয়ে দিলেন ও দোয়া করলেন । সাথে সাথে এমনভাবে চোখ ভাল হয়ে গেল যেন চোখে কোন যন্ত্রনাই ছিল না । নবী করীম(সাঃ) হযরত আলী (রাঃ) - এর হাতে পতাকা অর্পন করলেন ।
পতাকা নিয়ে হযরত আলী (রাঃ) জিজ্ঞাসা করলেন , হে আল্লাহর রাসূল ¡ আমি কি শত্রুদের সহিত এমনভাবে লড়াই করব যে , তারা আমাদের মত হয়ে যায় ?নবীজি সাঃ বল্লেন শান্তভাবে অগ্রসর হও । তাদের ময়দানে যাওয়ার পর প্রথমে তাদেরকে ইসলাম গ্রহনের দাওয়াত দিবে । ইসলাম গ্রহনের পর আল্লাহর কি কি হুকুম তাহাদের উপর ওয়াজিব হবে সেই সম্পর্কে তাদিগকে অবহিত করবে ।
আল্লাহর কছম তোমার উছিলায় আল্লাহ যদি একজন মানুষকে হেদায়েত নসীব করেন তবে তা তোমার জন্য লাল উটসমূহ অর্জনের চেয়ে অধিক কল্যাণকর বিবেচিত হইবে ।
২। হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হজরত আবদুল্লাহ বিন উনাইম (রা.) কে এবং হজরত আবদুল্লাহ বিন রাওয়াহা (রা.) সহ কয়েকজন সাহাবাকে গাফতান গোত্রের বশীর বিন ছালামের নিকট প্রেরণ করলেন। পথিমধ্যে এক অপ্রীতিকর ঘটনায় হজরত ইবনে উনাইম (রা.) এর মাথায় আঘাত পান। মাথার ক্ষতস্থানে নবি করিম সাঃ এর মুখের পবিত্র লালা লাগিয়ে দিলে তিনি আরোগ্য লাভ করলেন।
*** নবিজির মুখের লালায় অসাধারণ সুগন্ধি।
১। একদা রাসূলূ্ল্লাহ (সাঃ) এর কাছে একটি পানির মশক আনা হলো । তিনি সেখান থেকে এক আজলা পানি নিয়ে কুলি করে তা আবার ঐ মশকের মধ্যে ফেলে দিলেন । এরপর উক্ত মশকের পানি যখন কূপে ফেলা হলো , তখন সেই পানি থেকে কস্তরীর সুঘ্রাণ ছড়াতে লাগলো ।
২। একবার হযরত আনাস (রাঃ) এর কূপের পানিতে তিনি স্বীয় পবিত্র মূখের লালা ফেলে দিলেন । এরপর দেখা গেলো যে মদীনা শরীফের সমস্ত কূপের পানির চেয়ে উক্ত কূপের পানিই অধিক সুস্বাদু ।
৩। হজরত ইবনে আবদুল্লার ইস্তিয়াবে উৎবা বিন ফারকাদ (রা.)-এর স্ত্রী উম্মে আসিম (রা.)-এর উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, হজরত উম্মে আসিম (রা.) বলেন, উতবার সংসারে আমরা তিন স্ত্রী ছিলাম। সর্বদা আমরা সুগন্ধি ব্যবহার করতাম। কিন্তু হজরত উৎবা (রা.)-এর দেহ হতে সব সময় এমন সুগন্ধি বের হতো, যার সঙ্গে আমাদের সুগন্ধির কোনো তুলনা চলে না। এক দিন তাকে ওই সুগন্ধির বৈশিষ্ট্যের কারণ জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন, একবার আমি অসুস্থ হয়ে পড়লে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে দেখতে আসলেন। তিনি আমার দেহের কাপড় উঠিয়ে তার হাতের তালু মোবারকে তার পবিত্র থুথু মোবারক নিয়ে আমার পেট ও পিঠের ওপর মুছে দিলেন। এরপর হতে আজীবন আমার দেহ থেকে এই অসাধারণ সুগন্ধি বের হচ্ছে।
*** শিশুদের ক্ষোধা নিবারণে নবিজির মুখের লালা-
১। একবার হুজুর (সাঃ) এর নিকট কতিপয় দুগ্ধপোষ্য শিশুকে আনা হলো । তিনি স্বীয় পবিত্র মূখের লালা মোবারক তাদের মূখে দিলেন । অতঃপর শিশুগুলি এতই পরিতৃপ্ত হলো যে , সারাদিন তারা আর দুধই পান করলো না ।
২। ইমাম হাসান (রাঃ) একদা অত্যন্ত পিপাসার্ত হয়ে পড়লেন । হুজুর পাক (সাঃ) স্বীয় জিহ্বা মোবারক উনার মূখের মধ্যে পুরে দিলেন । তখন প্রিয় দৈাহিত্র নানা জানের জিহ্বা মোবারক চুষতে লাগলেন । এরপর সমস্ত দিন তিনি আর ক্ষূধা ও পিপাসা অনুভব করলেন না ।
৩। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত। একদা হজরত হাসান (রা.) ও হজরত হুসাইন (রা.) পিপাসার তাড়নায় কাঁদতে ছিলেন। এমন সময় হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বীয় জবান (জিহ্বা) মোবারক দ্বারা তাদের মুখে স্পর্শ করলেন। এর বরকতে তাদের পিপাসা নিবারণ হয়ে কান্না বন্ধ হয়ে গেল। (তিবরানি)
*** নবিজির মুখের লালায় বাকশক্তি লাভ :
হজরত ইবনে শায়বাহ উম্মে জুন্দুর (রাঃ) হতে বর্ণিত। খাশআম গোত্রের এক মহিলা একটি বোবা ছেলে নিয়ে হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে আসলে ওই বোবা ছেলেটির মুখে রাসুল সাঃ কুলি করলেন এবং নিজের দুহাত ধৌত করে ওই পানি মহিলাকে দিয়ে বললেন, এই পানি ছেলেটিকে পান করাও এবং এটা দ্বারা তার চক্ষু মুছে দাও। মহিলা এর ওপর আমল করার সঙ্গে সঙ্গে ছেলেটি কথা বলতে লাগল এবং তার বুদ্ধিমত্তা এত বৃদ্ধি পেল যে, এ ক্ষেত্রে অপর সবার তুলনায় তার শ্রেষ্ঠত্ব স্বীকৃতি পেল।
*** নবিজির মুখের লালায় লজ্জাশীলা হলো :
হজরত আবু ইমামা (রাঃ) হতে বর্ণিত। একদা হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আহার করছিলেন। সেসময় একটি বালিকা এসে তার কাছে খাবার চাইল। তিনি বরতন হতে খাবার বের করে দিলে সে তা আহার করল। মদিনাতে ওই মেয়েটি নির্লজ্জতায় প্রসিদ্ধ ছিল। হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পবিত্র মুখ মোবারকের খাবারের বরকতে পরবর্তীতে সে এত লজ্জাশীলা হলো যে, তার সঙ্গে অন্য কারো তুলনা চলত না।
*** নবিজির মুখের লালায় সাপের বিষ হলো পানি :
হিজরতের সময় হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও আফজালুন নাফ্ছ বা’দাল আম্বিয়া হজরত আবু বকর সিদ্দীক (রাঃ) সওর পর্বতের গুহায় আশ্রয় নিলেন। আবু বকর সিদ্দীক (রাঃ) গুহার ভেতরের সবকটি ছিদ্রের মুখ বন্ধ করে দিলেন ২-১টি ছিদ্র খোলা থাকলে তিনি তার পা দ্বারা ছিদ্রের মুখ বন্ধ করলেন।
বিষাক্ত সাপ এসে দংশন করলে বিষের তীব্র যন্ত্রণায় তার অলক্ষ্যেই চোখের অশ্রু গড়িয়ে হুজুর পাক সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের চেহারা মোবারকে পড়ে। তাতে নবিজির ঘুম ভেঙে যায়। তখন তিনি তার ক্ষতস্থানে পবিত্র মুখের লালা মোবারক লাগিয়ে দিলে সঙ্গে সঙ্গে বিষ পানি হয়ে যায়।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
রাসূল (ছাঃ)-এর মুখে থুথু নিক্ষেপ করা (القاء البصاق على فم النبى صــ)
(ক) উমাইয়া বিন খালাফের ভাই উবাই বিন খালাফ ছিল আরেক দুরাচার। সে যখন শুনতে পেল যে, তার সাথী ওক্ববা বিন আবু মু‘আইত্ব রাসূল (ছাঃ)-এর কাছে বসে কিছু আল্লাহর বাণী শুনেছে, তখন ভীষণ ক্ষেপে গিয়ে ওক্ববাকে বাধ্য করল যাতে সে তৎক্ষণাৎ গিয়ে রাসূল (ছাঃ)-এর মুখে থুথু নিক্ষেপ করে আসে। ওক্ববা তাই-ই করল’। এ প্রসঙ্গে নাযিল হয়,وَيَوْمَ يَعَضُّ الظَّالِمُ عَلَى يَدَيْهِ يَقُولُ يَا لَيْتَنِي اتَّخَذْتُ مَعَ الرَّسُولِ سَبِيلاً (27) يَا وَيْلَتَى لَيْتَنِي لَمْ أَتَّخِذْ فُلاَنًا خَلِيلاً (28) لَقَدْ أَضَلَّنِي عَنِ الذِّكْرِ بَعْدَ إِذْ جَاءَنِي وَكَانَ الشَّيْطَانُ لِلْإِنْسَانِ خَذُولاً- (الفرقان 27-29) ‘যালেম সেদিন নিজের দু’হাত কামড়ে বলবে, হায়! যদি (দুনিয়াতে) রাসূলের পথ অবলম্বন করতাম’। ‘হায় দুর্ভোগ আমার! যদি আমি অমুককে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করতাম’। ‘আমার কাছে উপদেশ (কুরআন) আসার পর সে আমাকে পথভ্রষ্ট করেছিল। বস্ত্ততঃ শয়তান মানুষের জন্য পথভ্রষ্টকারী’ (ফুরক্বান ২৫/২৭-২৯)।[1]
(খ) অনুরূপ এক ঘটনায় একদিন আবু লাহাবের পুত্র উতাইবা বিন আবু লাহাব এসে রাসূল (ছাঃ)-কে বলল, আমি সূরা নাজমের ১ ও ৮ আয়াত(وَالنَّجْمِ إِذَا هَوَى...ثُمَّ دَنَا فَتَدَلَّى) দু’টিকে অস্বীকার করি, বলেই সে হেঁচকা টানে রাসূল (ছাঃ)-এর গায়ের জামা ছিঁড়ে ফেলল এবং তাঁর মুখে থুথু নিক্ষেপ করল। অথচ এই হতভাগা ছিল রাসূল (ছাঃ)-এর জামাতা। যে তার পিতার কথা মত রাসূল (ছাঃ)-এর কন্যা উম্মে কুলছূমকে তালাক দেয়। তার ভাই উৎবা একইভাবে রাসূল (ছাঃ)-এর অপর কন্যা রুক্বাইয়াকে তালাক দেয়। পরে যার বিয়ে হযরত ওছমান (রাঃ)-এর সাথে হয়। তাঁর মৃত্যুর পরে উম্মে কুলছূমের সাথে ওছমান (রাঃ)-এর বিবাহ হয়। আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) তখন তাকে বদ দো‘আ করে বললেন,اللهُمَّ سَلِّطْ عَلَيْهِ كَلْبًا مِنْ كِلاَبِكَ ‘হে আল্লাহ! তুমি এর উপরে তোমার কোন একটি কুকুরকে বিজয়ী করে দাও’।[2]
উক্ত ঘটনা সম্পর্কে কবি হাসসান বিন ছাবিত (রাঃ) কবিতা রচনা করেন। কিছুদিন পরে উতাইবা সিরিয়ায় ব্যবসায়িক সফরে গেলে সেখানে যারক্বা (الزرقاء) নামক স্থানে রাত্রি যাপন করে। এমন সময় হঠাৎ একটা বাঘকে সে তাদের চারপাশে ঘুরতে দেখে ভয়ে বলে উঠে,هَذَا وَاللهِ آكِلِي كَمَا قَالَ مُحَمَّدٌ، قَاتِلِي ابْنُ أَبِي كَبْشَةَ وَهُوَ بِمَكَّةَ وَأَنَا بِالشَّامِ ‘আল্লাহর কসম! এ আমাকে খেয়ে ফেলবে। এভাবেই তো মুহাম্মাদ আমার বিরুদ্ধে বদ দো‘আ করেছিল। সে আমাকে হত্যাকারী। অথচ সে মক্কায় আর আমি শামে’। অতঃপর বাঘ এসে সবার মধ্য থেকে তাকে ধরে নিয়ে ঘাড় মটকে হত্যা করল’।[3]
[1]. মুছান্নাফ আব্দুর রাযযাক হা/৯৭৩১; ইবনু হিশাম ১/৩৬১; তাহকীক ইবনু হিশাম ক্রমিক-৩৫২, আছার ছহীহ; আর-রাহীক্ব ৮৮ পৃঃ।
[2]. আর-রাহীক্ব পৃঃ ৯৮; হাকেম হা/৩৯৮৪, হাকেম ছহীহ বলেছেন, যাহাবী তা সমর্থন করেছেন।
[3]. কুরতুবী হা/৫৬৯০; আবু নু‘আইম ইছফাহানী, দালায়েলুন নবুঅত হা/৩৮১; মাজমা‘উয যাওয়ায়েদ হা/৯৮২০; কুরতুবীর মুহাক্কিক বলেন, হাদীছটি একদল তাবেঈ কর্তৃক ‘মুরসাল’ সূত্রে বর্ণিত। তবে এগুলির সমষ্টি বর্ণনাটিকে শক্তিশালী করে’ (দ্রঃ কুরতুবী, তাফসীর সূরা নাজম ১ আয়াত)।
--------------------------------------------------------------------------------------------------
নবিজির মুখে পঁচা হাড়ের গুঁড়া ছুঁড়ে মারা (نفخ العظم الرميم نحو الرسول صــ)
উবাই বিন খালাফ নিজে একবার পচা হাড্ডি চূর্ণ করে রাসূল (ছাঃ)-এর কাছে গিয়ে বলল, হে মুহাম্মাদ! তুমি কি ধারণা কর যে, একটা মানুষ মরে পচে-গলে যাওয়ার পর পুনরায় জীবিত হবে? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তখন সে হাতে রাখা পচা হাড়ের গুঁড়া তাঁর মুখের উপরে ছুঁড়ে মারে’ (ইবনু হিশাম ১/৩৬১-৬২)। যেমন আল্লাহ বলেন,وَضَرَبَ لَنَا مَثَلاً وَنَسِيَ خَلْقَهُ قَالَ مَنْ يُحْيِ الْعِظَامَ وَهِيَ رَمِيمٌ؟ قُلْ يُحْيِيهَا الَّذِي أَنْشَأَهَا أَوَّلَ مَرَّةٍ وَهُوَ بِكُلِّ خَلْقٍ عَلِيمٌ ‘মানুষ আমাদের সম্পর্কে নানা উপমা দেয়। অথচ সে নিজের সৃষ্টির কথা ভুলে যায়। সে বলে, হাড়গুলিতে কে প্রাণ সঞ্চার করবে যখন ওটা পচে-গলে যাবে?’ ‘বলে দাও, ওগুলিকে জীবিত করবেন তিনি, যিনি প্রথমবার সেগুলিকে সৃষ্টি করেছেন। আর তিনি সকল বিষয়ে সুবিজ্ঞ’ (ইয়াসীন ৩৬/৭৮-৭৯)।
এছাড়া এ প্রেক্ষিতে সূরা মারিয়াম ৬৬, ক্বাফ ৩ ও অন্যান্য আয়াত সমূহ নাযিল হয়। যদিও শানে নুযূল হিসাবে বর্ণিত ঘটনাসমূহের সনদ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ‘মুরসাল’। তবে এটা নিশ্চিত যে, বিভিন্ন প্রশ্ন ও ঘটনার প্রেক্ষিতেই কুরআনের অধিকাংশ আয়াত নাযিল হয়েছে, যাতে রাসূল (ছাঃ)-এর অন্তরে প্রশান্তি আসে। যেমন আল্লাহ বলেন,وَقَالَ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا لَوْلاَ نُزِّلَ عَلَيْهِ الْقُرْآنُ جُمْلَةً وَاحِدَةً كَذَلِكَ لِنُثَبِّتَ بِهِ فُؤَادَكَ وَرَتَّلْنَاهُ تَرْتِيْلاً- وَلاَ يَأْتُوْنَكَ بِمَثَلٍ إِلاَّ جِئْنَاكَ بِالْحَقِّ وَأَحْسَنَ تَفْسِيْرًا ‘কাফেররা বলে যে, কেন কুরআন তাঁর প্রতি একসাথে নাযিল হল না? এমনিভাবেই আমি এটি নাযিল করেছি এবং ক্রমে ক্রমে আবৃত্তি করেছি, যাতে আমি তোমার অন্তরকে দৃঢ় করতে পারি’। ‘তারা তোমার নিকটে কোন সমস্যা উত্থাপন করলেই আমি তার সঠিক জওয়াব ও সুন্দর ব্যাখ্যা দান করে থাকি’ (ফুরক্বান ২৫/৩২-৩৩)।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন